হাইড্রোজেন ও কার্বন দ্বারা গঠিত হাইড্রোকার্বন এবং হাইড্রোকার্বন থেকে উদ্ভূত যৌগসমূহকে জৈব যৌগ বলে।
সুইডিশ বিজ্ঞানী বার্জেলিয়াস ১৮১৫ সালে প্রস্তাব করেন যে, জৈব যৌগসমূহ কেবল সজীব উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে এক রহস্যময় প্রাণশক্তির প্রভাবে উৎপন্ন হয়ে থাকে। একে প্রাণশক্তি মতবাদ বলে।
১৮২৮ সালে ফ্রেডরিক উলার পরীক্ষাগারে অজৈব অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও লেড সায়ানেট থেকে আকস্মিকভাবে ইউরিয়া প্রস্তুত করে প্রাণশক্তি মতবাদ ভুল প্রমাণ করেন।
জৈব যৌগের সংখ্যা ৮০ লক্ষের অধিক। অন্যদিকে অজৈব যৌগের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষের মত। এই সংখ্যাধিক্যের কারণ হলো–
কার্বন মৌলের ক্যাটেনেশন ধর্ম
জৈব যৌগের সমাণুতা ধর্ম
জৈব যৌগের পলিমারকরণ
কার্বনের তড়িৎ ঋণাত্মকতা ও বন্ধন শক্তি।
জৈব যৌগের বৈশিষ্ট্য
জৈব যৌগে কার্বন অবশ্যই থাকে। কার্বনের সাথে হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, সালফার প্রভৃতি মৌল যুক্ত থাকে।
প্রধানত সমযোজী বন্ধন দ্বারা গঠিত হয়।
নিম্ন গলনাঙ্ক ও নিম্ন স্ফুটনাংক বিশিষ্ট হয়।
জৈব যৌগ পোলার দ্রাবক যেমন পানিতে অদ্রবণীয়, কিন্তু জৈব দ্রাবক যেমন, ইথার ও বেনজিনে দ্রবণীয়। তবে হাইড্রক্সিল মূলক যুক্ত যৌগ (চিনি, অ্যালকোহল) পানিতে দ্রবণীয়।
জৈব যৌগের দহনের পর কোনো অবশেষ থাকে না।
জৈব যৌগ গলিত অবস্থায় বা দ্রবণে আয়নিত হয় না বলে তড়িৎ বিশ্লেষ্য নয়। অর্থাৎ বিশুদ্ধ জৈব যৌগ তড়িৎ অপরিবাহী।